নিজস্ব সংবাদদাতা: মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার আরিচাঘাট-তেওতা-জাফরগঞ্জ সড়কে অবৈধ মাটি ব্যবসায়ীদের পাইপ স্থাপন করে মাটি নেয়া ও খানাখন্দে জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। যানচলাচলের জন্য গুরুত্বপুর্ন এ সড়কটির বিভিন্নস্থানে ড্রেজারের পাইপ স্থাপন করে পাইপের উপর উচু করে মাটি ফেলায় যানবাহন আটকে গিয়ে দুর্ঘটনার সৃষ্টি হচ্ছে। অন্যদিকে সামান্য বৃষ্টি হলেই পানি জমে তৈরি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। এতে জনদুর্ভোগ যেনো চরমে।
শুক্রবার সরেজমিন পরিদর্শন করে দেখা যায়, গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কের উপর দিয়ে মাটি ব্যবসায়ীদের পাইপ এবং তার উপর মাটির স্তুপের কারণে গাড়ি চালকেরা যাত্রী নামিয়ে দিচ্ছেন এবং কয়েকজন গাড়িটি ধরে উচু করে মাটির ঢিবি পার করছেন। এমতাবস্থায় মারাত্মক ঝুকির মধ্যে চালাচল করছেন যানবাহন চালকরা। স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, অনেক সময় রিকশা উল্টে গিয়ে দুর্ঘটনার মতো ঘটনা ঘটছে। চরম আতংকের মধ্য দিয়ে চলাচল করছেন যাত্রীরা। রাস্তার উপর দিয়ে মাটি ব্যবসায়ীদের পাইপ স্থাপন ও পানি নিষ্কাসনের ব্যবস্থা না থাকায় একটু বৃষ্টি হলেই সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। এতে বেগ পেতে হচ্ছে ইজিবাইক, মোটরসাইকেল, সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালকদেরকে। ভোগান্তি থেকে রেহায় পাচ্ছেন না রাস্তার আশপাশের স্থানীয় সাধারণ মানুষও।
স্থানীয় ভুক্তভোগীরা জানান,এ রাস্তায় পানি আর কাঁদা জমে চলাচলে অনুপোযোগী হয়ে পড়ে। অপরদিকে রাস্তার উপর দিয়ে বালু মাটি ব্যাবসায়ীদের পাইপ বসানোর কারণে রিকশা, সিএনজিসহ সকল ধরনের যানবাহন চলাচলে অসুবিধা হচ্ছে। সড়কের এমন অবস্থার কারণে যানবাহন চলাচল দুরের কথা পায়ে হাটাও এখন অনেক কষ্টকর হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় রিকশা চালক আশরাফ হোসেন বলেন, অল্প বৃষ্টি হলেই এ রাস্তায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে কর্দমাক্ত হয়ে পড়ে। এতে যানবহান চলাচলে ভীষন অসুবিধায় পড়তে হচ্ছে। এছাড়া এ রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী পথচারিদের চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। অনেক রিকশা চালকরা এ রাস্তা দিয়ে চলাচললে অনিহা প্রকাশ করেন। আমরা চাই রাস্তার পাশ দিয়ে পানি নিস্কাশনের জন্য ড্রেনের ব্যবস্থা করা হোক। আর এই ড্রেজার পাইপের একটা বিহিত হোক। ইজিবাইক চালক মো. রাকিব বলেন, পানি জমে থাকায় রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। এ সময় ইজিবাইক চালাতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এতে দুর্ঘটনায় পড়তে হচ্ছে আমাদেরকে।
মোটরসাইকেল চালক হামিদ আলী বলেন, পানির মধ্য দিয়ে মোটরসাইকেল চালানোর সময় রাস্তার অবস্থা বোঝা যায় না। গর্তের ফলে দুর্ঘনার আশংকা থাকে। রাস্তার পাশ দিয়ে ড্রেনেজ ব্যাবস্থা করলে আমরা মুক্তি পেতাম। আর ড্রেজারের পাইপে মোটর সাইকেল আটকে যায় মাঝে মধ্যে। আমাদের চাওয়া দ্রত এসবের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা করলে জনসাধারণের দুর্ভোগ কমবে।
স্থানীয় আব্দুল জব্বার বলেন, অল্প বৃষ্টিতেই রাস্তায় পানি জমে যায়। এক বছরের বেশী সময় ধরে রাস্তাটির এ বেহাল দশায় আমাদের চরম ভোগান্তি হচ্ছে। রাস্তার পানি আমাদের বাড়ি-ঘরে প্রবেশ করছে। রাস্তার মাঝে পানি জমে থাকায় যানবাহন শ্রমিক ও পথচারীদেরকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অতি দ্রুত আমাদের এখানে একটি ড্রেন নির্মাণ করা দরকার।
পথচারী শাহীনুর আক্তার বলেন, আমার বাড়ি দঃ তেওতা। প্রায়ই এই সড়কে চলাচল করতে হয়। খানাখন্দে ভরপুর ও অবৈধ ড্রেজারের পাইপ স্থাপন আর তার উপর আবার মাটির ঢিবি এ যেনো মরার উপর খারার ঘা। প্রশাসনের উচিত দ্রুত এর ব্যবস্থা নেয়া। চলাচলে প্রচুর কষ্ট হয়। বিশেষ করে বৃদ্ধ ও গর্ভবতীদের। মাঝে মাঝে প্রচন্ড ঝাকিতে কোমর ব্যাথায় ভুগছি।
এ বিষয়ে শিবালয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. জাহিদুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান আমাকে জানিয়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা ইঞ্জিনিয়ারকে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়েছে। শিবালয় উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার মোবারক হোসেন বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি। ওখানে লোক পাঠানো হয়েছে। এসে রির্পোট করার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।