মন্জুর রহমান মানিকগঞ্জ: মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলায় তাড়াইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জান্নাতুল ফেরদৌস স্বর্না নামের এক প্রধান শিক্ষিক আট দিনের নৈমিত্তিক ছুটি নিয়ে প্রায় এক বছর ধরে ইংল্যান্ডে বসবাস করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এদিকে স্কুলে অনুপস্থিত থাকলেও ওই প্রধান শিক্ষক সরকারী ওয়েব সাইডে এখনো বহাল আছেন। এ কারনে তার পরিবর্তে অন্য কোন শিক্ষক পদায়ন করতে পারছেন না বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।
অনুপস্থিত ওই শিক্ষিকা উত্তর মহাদেবপুর গ্রামের এটিএম আলী আকবরের মেয়ে। প্রথমিক বিদ্যালয় পরিবীক্ষণ ও পরিদর্শন প্রতিবেদন সুত্রে প্রধান শিক্ষিকার ইংল্যান্ডে বসবাস করার তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, তৎকালিন জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ চলতি বছরের ১৩ জুন সরেজমিন স্কুল পরিদর্শনে এসে পরিবীক্ষণ ও পরিদর্শন প্রতিবেদনে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিনা অনুমতিতে ইংল্যান্ড গমন করেছে মর্মে বিষয়টি মন্ত্রী পরিষদের সচিব, প্রাথমিক ও গন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, বিভাগীয় কমিশনার ও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে অবহিত করেছিলেন। পাশাপাশি বিষয়টি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য তৎকালিন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে নির্দেশ দিয়েছেন।
শিবালয় উপজেলা শিক্ষা অফিস সুত্রে জানা গেছে, গত ২০২২ সালে ২২ সেপ্টেম্বর থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মাত্র ৮ দিনের নৈমিত্তিক ছুটি নেন শিবালয় উপজেলার শিমুলিয়া ইউনিয়নের তাড়াইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জান্নাতুল ফেরদৌস স্বর্না। এরপর তিনি অফিশিয়াল ভাবে ছুটি না বাড়িয়ে বিনা অনুমতিতে স্কুলে অনুপস্থিত থাকেন। পরে বিদ্যালয়ে ওই প্রধান শিক্ষকের অনুপস্থিত থাকা এবং স্কুলে না আসায় তার বাড়িতে ৬বার কৈফিয়ত তলবপত্র প্রদান করে বিষয়টি জেলা শিক্ষা অফিসারকে অবহিত করেন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা।
তারাইল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের (ভারপ্রাপ্ত) প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ জিন্নত আলী খান জানান, গত ২০২২ সালের ২২ সেপ্টেম্বর থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৮দিনের নৈমিত্তিক ছুটি নেন প্রধান শিক্ষক জান্নাতুল ফেরদৌস স্বর্না। এরপর তার প্রহেলা অক্টোবর কর্মক্ষেত্রে যোগদানের কথা থাকলেও গত এক বছরে তিনি আসেননি। দীর্ঘদিন প্রধান শিক্ষক স্কুলে অনুপস্থিত থাকায় শিক্ষা কার্যক্রম ধারুন ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বিষয়টি বার বার উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে অবগত করা হয়েছে।
শিবালয় উপজেলা শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) এলিসা আফরিন খানম জানান, তারাইল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকার অনুপস্থিত থাকার বিষয়টি জেলা শিক্ষা অফিসারকে অবগত করা হয়েছে। সর্বশেষ চলতি মাসের গত ১৭ সেপ্টেম্বর অনুপস্থিত ওই প্রধান শিক্ষিকাকে কৈফিয়ত তলব করে পত্র দেয়া হয়েছে।
এ ব্যপারে কথা বলতে মানিকগঞ্জ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. তৌহিদুল ইসলাম বলেন, আমি আড়াইমাস হলো মানিকগঞ্জে এসেছি। এ বিষয়টি সম্পর্কে আমি অবগত ছিলাম না।তিনি বলেন, আমি বিষয়টি জেনে ঢাকা বিভাগের বিভাগীয় পরিচালক বরাবর লিখিত ভাবে জানিয়েছি। দীর্ঘদিন তিনি স্কুলে অনুপস্থিত থাকায় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হবে।