রিয়া আক্তার: ভারতের উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের চারটি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। এতে নিম্নাঞ্চলের জমিতে চাষ করা মাষকলাইয়ের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সঙ্গে মরিচ, কলাসহ অন্যান্য সবজিতেও পড়েছে প্রভাব। অন্তত ১৮শ হেক্টর জমির আবাদি ফসল ডুবে গেছে। এতে প্রায় ২৪ কোটি টাকার বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকেরা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার নুরুল ইসলাম বলেন, বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর পর্যন্ত মরিচা, ফিলিপনগর, চিলমারী ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ১ হাজার ৬২০ হেক্টর জমির মাষকলাই পানিতে ডুবে গেছে। এতে অন্তত ২৩ কোটি ৩৩ লাখ টাকার ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাছাড়া মরিচ ৭০ হেক্টর, কলা ৭৩ হেক্টর ও সবজি ১৩ হেক্টরের মতো পানিতে ডুবেছে। যার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাপ করা এখনই করা সম্ভব না বলেও জানিয়েছেন ঐ কর্মকর্তা।
তিনি আরও বলেন, এবার চরের ২ হাজার ৩২৩ হেক্টর জমিতে মাষকলাই চাষ করেছিলেন কৃষকেরা।
এদিকে বুধবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত পদ্মায় ২ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে যা দুপুর ১২টা পর্যন্ত অপরিবর্তিত ছিল। এতে পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে ১২ দশমিক ৩৮ সেন্টিমিটার উচ্চতা দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এই পয়েন্টে বিপদসীমা ধরা হয়েছে ১৩ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার, যা নিশ্চিত করেছে পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবোর) ওয়াটার হাইড্রোলজি বিভাগ।
ইতিমধ্যে নদীতীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকে পড়ায় চার ইউনিয়নের পদ্মার চরের প্রায় ৩৬টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ভাঙন ও বন্যার আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছে তারা।
চিলমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান জানান, চরের মাষকলাই-এর জমি সব ডুবে গেছে। এতে কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তাছাড়া মরিচ ও সবজির জমিতেও পানি উঠেছে।
রামকৃষ্ণপুর ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজ মন্ডল জানান, পদ্মার চরের প্রায় সব আবাদি জমি তলিয়ে গেছে। এতে চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
নদীর পানি বৃদ্ধি নিয়ে আশার কথা জানিয়েছেন পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবোর) ওয়াটার হাইড্রোলজি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল করিম। তিনি বলেন, আজকে থেকে আর পানি বাড়ার আশঙ্কা নেই। দু-এক দিন স্থিতিশীল থেকে পানি কমতে শুরু করবে। আজ সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত আর পানি বাড়েনি বলে জানান তিনি। তবে, বৃষ্টি অব্যাহত থাকার কারণে স্থানীয়রা মনে করছেন আপাতত পানি কমার কোন লক্ষণ তারা দেখছেন না।