বাংলাদেশ ওলামা দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে বহিষ্কৃত নেতার নাম থাকায় নেতাকর্মীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

স্টাফ রিপোর্টার: বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের ১৩৭ সদস্যবিশিষ্ট নতুন কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দিয়েছে বিএনপি। গত ২ জুলাই বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। কমিটিতে মাওলানা কাজী মো. সেলিম রেজাকে আহ্বায়ক এবং মাওলানা কাজী মোহাম্মদ আবুল হোসেনকে সদস্য সচিব করা হয়েছে।

সম্প্রতি ওলামা দলের কেন্দ্রীয় কমিটিতে কেন্দ্রীয় ওলামা দলের সাবেক যুগ্ন আহবায়ক বহিষ্কৃত নেতা মো: হাবিবুল্লাহ নোমানীর নাম থাকায় বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

জানা যায়, গত ২০২০ সালের ২ সেপ্টেম্বর জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের তৎকালীন কমিটির আহবায়ক প্রিন্সিপাল মাওলানা শাহ্ মোহাম্মদ নেছারুল হক, সিনিয়র যুগ্ন আহবায়ক মাওঃ কাজী মো. সেলিম রেজা, সদস্য সচিব প্রিন্সিপাল নজরুল ইসলাম তালুকদার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে “ওলামা দলের সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত মোতাবেক মাওঃ হাবিবুল্লাহ নোমানীকে দল থেকে বহিষ্কার” শিরোনামে “সংগঠন বিরোধী কার্যকলাপে জড়িত এবং বারবার সতর্ক করার পরও দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির সুনির্দিষ্ট কারন” দেখিয়ে বহিষ্কারাদেশ ও সতর্কবার্তা দেয়া হয়।

সম্প্রতি, ওলামা দলের ১৩৭ সদস্যবিশিষ্ট নতুন কেন্দ্রীয় কমিটিতে উক্ত বহিস্কৃত মাওঃ হাবিবুল্লাহ নোমানীকে সদস্য করায় অন্যান্য নেতৃবৃন্দের মাঝে মিশ্রপ্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।

বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ বলেন, কোনো বহিস্কৃত সদস্য কোনোভাবেই সংগঠনের সদস্য থাকতে পারেন না। সেখানে সংগঠন বিরোধী কার্যকলাপে জড়িত এবং বারবার সতর্ক করার পরও দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করায় বহিস্কৃত সদস্য কিভাবে কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান পায়? নবগঠিত কমিটির ৪১নং সদস্য হিসেবে পূর্বে বহিস্কৃত আব্দুল্লাহ আল মামুন সিদ্দিকীর নাম লিপিবদ্ধ হওয়ায় তা প্রত্যাহার করা হলে মাওঃ হাবিবুল্লাহ নোমানীকেও সদস্যপদ হতে প্রত্যাহার করা উচিৎ।
মানিকগঞ্জ পৌর বিএনপির কার্যনির্বাহী সদস্য ও জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান কল্যান ফ্রন্টের যুগ্ম আহবায়ক মিঠু রবিদাস বলেন, “আমি একজন বিএনপির কর্মী হিসেবে জানি তাকে জাতীয়তাবাদী ওলামা  দল থেকে সংগঠন বিরোধী কার্যক্রমের জন্য বহিস্কার করে কেন্দ্রীয় কমিটি। বহিষ্কার আদেশ প্রত্যাহার না করে কিভাবে নতুন কেন্দ্রীয়  কমিটিতে সে স্থান পেল নেতাদের কাছে আমার প্রশ্ন। এভাবে বহিষ্কৃত নেতারা পদ পেলে বহিষ্কারের কোন গুরুত্ব থাকবে না। এভাবে হলে বহিস্কৃত নেতারা উৎসাহ পাবে এবং দলের সাংগঠনিক ক্ষতি হবে। এছাড়া এ নিয়ে নেতাকর্মীদের মাঝে মিশ্রপ্রতিক্রিয়ারও সৃষ্টি হচ্ছে।”

এ বিষয়ে তৎকালীন কমিটির আহবায়ক প্রিন্সিপাল মাওলানা শাহ্ মোহাম্মদ নেছারুল হক বলেন, “তাকে বহিস্কার করা হয়েছে। বহিস্কৃত কাউকে কমিটিতে রাখার কোনো নিয়ম নাই। বহিস্কারাদেশ থাকা অবস্থায় কিভাবে সে নতুন কমিটিতে যুক্ত হলো সে বিষয়ে আমার জানা নাই। এ বিষয়ে বর্তমান আহবায়ক ভালো বলতে পারবেন।”

এ বিষয়ে জাতীয়তাবাদী ওলামা দল মানিকগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি কাজী আশিকুর রহমান খান রাজুকে প্রশ্ন করলে তিনি উক্ত বহিষ্কারের সত্যতা নিশ্চিত করেন এবং পরবর্তীতে বহিস্কার প্রত্যাহার হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কোনো কাগজ বা সদুত্তর দিতে পারেননি।

বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার হয়েছে কি না জানতে চেয়ে মাওঃ হাবিবুল্লাহ নোমানীর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বহিষ্কার প্রত্যাহারের বিষয় এড়িয়ে গিয়ে বলেন, “ওলামা দলের একটা সদস্যকেও যদি দল থেকে বাদ দিতে হয় তবে সেটা দিবে দপ্তরের(বিএনপির) মহাসচিব বা সিনিয়র যুগ্ন মহাসচিব। এখানে ওলামা দলের আহবায়ক বা সদস্য সচিবের সাংগঠনিক গঠনতন্ত্র মোতাবেক এই (বহিষ্কার করার) এখতিয়ার নাই। সে ব্যাক্তিগত ঈর্ষান্বিত হয়ে আমাকে অব্যহতি দিছে যা সম্পুর্ন অবৈধ।”

এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার লক্ষ্যে জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের নবগঠিত কমিটি আহবায়ক মাওলানা কাজী মো. সেলিম রেজার সাথে মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগ চেষ্টা করা হলে ফোন রিসিভ করেনি।

উল্লেখ্য, নবগঠিত কমিটির ৪১নং সদস্য হিসেবে পূর্বে বহিস্কৃত আব্দুল্লাহ আল মামুন সিদ্দিকীর নাম লিপিবদ্ধ হওয়ায় তা প্রত্যাহার আদেশ দেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

Scroll to Top