নিজস্ব প্রতিবেদক: মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ভবন ভাড়া দিয়ে সাড়ে পাঁচ বছরের ২১ লক্ষাধিক টাকা বকেয়া ভাড়া না পেয়ে বিপাকে পড়েছেন ভবন মালিক মো: ছবেদ আলী। বার বার ভাড়ার টাকার জন্য তাগিদ দিয়েও কোন সাড়া না পেয়ে অবশেষে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে বিবাদী করে মানিকগঞ্জ সিনিয়র জজ আদালতে মামলা করতে বাধ্য হয়েছেন তিনি।
মামলা সূত্রে জানা যায়, মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকার শহীদ স্মরনী সড়কের হাজী ছবেদ সুপার মার্কেট ভবনের তৃতীয় তলা স্থানীয় গণপূর্ত বিভাগের ভাড়া নির্ধারনী প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গত ২০১৬ সালের ১ জুলাই মাসিক ৩২,৩৪৯ টাকা ভাড়া চুক্তিতে পাঁচ বছরের জন্য মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর কাছে ভাড়া দেন মোঃ ছবেদ আলী। ভাড়ার চুক্তিপত্রের শর্ত অনুযায়ী পরবর্তী মাসের প্রথম সপ্তাহে ভাড়ার টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও মাসের পর মাস ভাড়া বকেয়া রাখেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ।
উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট হতে ভাড়ার টাকা না পাওয়ার অজুহাত দেখিয়ে ২০২১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত পাঁচ বছরের ভাড়া বাবদ ১৯ লক্ষ ৪০ হাজার ৯ শত ৪০ টাকা বকেয়া করেন কর্তৃপক্ষ। এরপর মানিকগঞ্জ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর নিজস্ব ভবন নির্মিত হলে সেখানে অফিস স্থানান্তর করা হবে বলে জানায় কর্তৃপক্ষ। কিন্ত নিজস্ব ভবনে যেতে একটু সময় লাগবে জানিয়ে ভাড়ার চুক্তির মেয়াদ শেষ হলেও আরো ছয় মাস কালক্ষেপন করেন কর্তৃপক্ষ। ফলে পরবর্তী ছয় মাসের ভাড়া সহ মোট সাড়ে ৫ বছরের ২১ লক্ষ ৩৫ হাজার ৩৪ টাকা ভাড়া বকেয়া রাখে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ। ভবন মালিক ভবন ভাড়া বাবদ তার পাওনা টাকা আদায়ে বার বার তাগিদ দিয়েও কোন সাড়া পাননি। এরপর ২০২২ সালের ৬ ডিসেম্বর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো: লুৎফর রহমানকে লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ করেন। তারপরও কোন প্রতিকার না পেয়ে আদালতে মামলা করে আইনের আশ্রয় নেন ভবন মালিক ছবেদ আলী।
ভবন মালিক ছবেদ আলী জানান, বর্তমান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা লুৎফর রহমান আসার আগের সকল লেনদেন ক্লিয়ার করেছেন পূর্বের অফিসার। কিন্তু লুৎফর রহমান সাহেব দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই ভাড়া বকেয়া রেখেছেন। বকেয়া ভাড়া আদায়ে তাকে বারবার তাগিদ দিলেও তিনি কর্ণপাত করেননি। ভাড়া বকেয়া রাখতে রাখতে ২১ লক্ষাধিক টাকা বকেয়া রেখেছেন। আমি আর্থিক সংকটে আছি জানালেও তাদের মন গলেনি। বারবার বলার পরও টাকা না দেয়ায় মামলা করতে বাধ্য হয়েছি।
বিষয়টি নিয়ে সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মো: লুৎফর রহমান বলেন, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে টাকা না পাওয়ায় যথা সময়ে ভাড়ার টাকা পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি। তার ভবন ছাড়ার পর সে এতদিনে টাকা পেয়ে যেতেন। কিন্তু মামলা করার কারণে টাকা পায়নি। এখন যেহেতু মামলা হয়েছে তাই মামলার প্রসিডিউর অনুযায়ী ভাড়ার টাকা পরিশোধ করা হবে।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা: মোয়াজ্জেম আলী খান চৌধুরী বলেন, আমাদের সিস্টেম অনুযায়ী দীর্ঘদিনের বকেয়া টাকা রিভাইস করে মন্ত্রণালয় থেকে আনা খুবই কষ্টসাধ্য। যতদূর জানি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মন্ত্রণালয়ে বিষয়টি লিখিতভাবে জানিয়েছে। আর এটা নিয়ে মামলাও হয়েছে। এরপর মামলার রায় অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।