নিজস্ব প্রতিবেদক: মানিকগঞ্জে কাজের বিনিময়ে টাকা (কাবিটা) প্রকল্পে শ্রমিকের বদলে অবৈধভাবে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করে রাস্তা সংস্কার করা হয়েছে। ঘটনাটা ঘিওর উপজেলা বারিয়াখোড়া ইউনিয়নের তিন নং ওয়ার্ডের কাউটিয়া গ্রামের।
গ্রামীণ এলাকায় কর্মসংস্থান এবং রিদ্র জনগোষ্ঠীর আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে শ্রমিক দিয়ে মাটি কেটে কাজ শেষ করার বাধ্যবাধকতা থাকলেও এই নিয়মের কোন তোয়াক্কাই করেনি ওই প্রকল্পের সভাপতি স্থানীয় ইউপি সদস্য কামাল হোসেন লেবু। এমনকি কাজ শেষে প্রকল্পের টাকাও পরিশোধ করা হয়েছে বলে জানান উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার কাবিটা কর্মসূচির দ্বিতীয় পর্যায়ের উপজেলার বালিয়াখোড়া ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডে আওকাতের বাড়ি থেকে আসলামের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা পুন:নির্মাণ কাজে ১ লাখ ৭০ হাজার ৫৪২ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। ওই প্রকল্পে শ্রমিক দিয়ে মাটি কাটার নিয়ম থাকলেও কাজের সঙ্গে সংশিষ্টরা সরকারি নিয়মনীতিকে তোয়াক্কা না করেই অধিক লাভের জন্য ড্রেজার মেশিন দিয়ে রাস্তায় মাটি ভরাটের কাজ করেছেন।
সরেজমিন ঘুরে কাউটিয়া গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, শুধু এই প্রকল্পের কাজেই ইউপি সদস্য কামাল হোসেন লেবু ড্রেজার মেশিন ব্যবহার করেননি। বরং সরকারি প্রকল্পের ড্রেজার দাবি করে ওই এলাকার বেশ কয়েকজন মানুষের নিচু জমিও ভরাটের কাজ করেছেন তিনি। এছাড়া অপরিকল্পিতভাবে নদী থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলনের জন্য নদীর দুই পাড় নদী গর্ভে দেবে যাওয়ার চরম আশঙ্কা রয়েছে। ইতি মধ্যে কয়েক জায়গায় ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।
এ প্রকল্পের কাজে দরিদ্রদের সুযোগ দিয়ে তাদের কর্মসংস্থান তৈরির কথা ছিল। কিন্তু, স্থানীয়রা জানিয়েছেন, নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে মাটি এনে রাস্তা সংস্কারের কাজ হয়েছে এখানে।দরিদ্ররা কাজের কোনো সুযোগই পায়নি, ফলে বঞ্চিত হচ্ছে তারা তাদের অধিকার থেকে । এটা সরকারি কাজ এই কাজে কেউ বাঁধা দিলে নানা রকমের সমস্যা হবে এমন কথাও বলেছেন স্থানীয় ইউপি সদস্য লেবু।
স্থানীয় ইউপি সদস্য কামাল হোসেন লেবুর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ‘আমি নির্বাচিত একজন জনপ্রতিনিধি। এলাকায় আমার ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। কিন্তু আমাকে যারা হিংসা করে তারাই আপনাদের এ বিষয়ে বলেছে। আমি রাস্তা সংষ্কার প্রকল্পে ড্রেজার দিয়ে মাটি ফেলেছি। আর ছোটখাট কয়েকটি মাটি ভরাটের কাজ করেছি এলাকায়।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘কাবিটা প্রকল্পের আওতায় কাউটিয়া গ্রামে যে প্রকল্প ছিল তার কাজ বুঝে নিয়ে প্রকল্পের জন্য বরাদ্দকৃত টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। কাবিটা প্রকল্পে ড্রেজার দিয়ে মাটি ফেলার নিয়ম আছে কিনা সে প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, এই প্রকল্পে ড্রেজার দিয়ে মাটি ভরাটের কোন সুযোগ নেই। হয়তো আশেপাশে মাটি না থাকার কারণে সেই এই কাজটা করেছে। প্রকল্পে যেই মাটি দেওয়ার কথা ছিল সেই মাটি ওই সাইটে পেয়েছি তাই বিলটা পরিশোধ করা হয়েছে।’