নিজস্ব প্রতিবেদক: মানিকগঞ্জ সদর উপজেলায় আটিগ্রাম ইউনিয়নে একটি সরকারি রাস্তার কাজ বাধা দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুধু তাই নয়, সন্ত্রাসীদের হামলায় কাজের ঠিকাদার গুরুতর আহত হয়েছেন। ভাঙচুর করা হয়েছে সরকারি রাস্তার কাজে ব্যবহৃত এস্কাভেটর।
আহত ঠিকাদার বিপ্লব হোসেন বাতেনকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাঁর মেরুদণ্ডসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করা হয়েছে।
সদর থানার পুলিশ, ভূক্তভোগী পরিবার এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, জেলা সদর উপজেলার আটিগ্রাম ইউনিয়নের জাগীর দিঘুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে কালীনগর গ্রামে ২ হাজার ৮০০ ফুট দৈর্ঘ্য এবং গড়ে ১০ ফুট প্রশস্ত রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদের অর্থায়নে ৩ লাখ টাকা ব্যয়ে রাস্তাটি নির্মাণ করছে ইউনিয়ন পরিষদ। বিদ্যালয়ের অদূরে রাস্তায় তিন ফুটের মতো জায়গা পড়েছে জাগীর দিঘুলিয়া গ্রামের মোজাম্মেল হকের। তিনি রাস্তায় জায়গা না দেওয়া জনগণের চলাচলের জন্যস্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান, স্থানীয় ইউপি সদস্যসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের অনুরোধে মোজাম্মেলকে ওই জায়গা ছেড়ে দিতে রাজি হন। এর পর রাস্তাটির অধিকাংশ স্থানে কাজ সম্পন্ন হয়েছে। পরে তাঁর জায়গা রাস্তার কাজ করতে গেলে তিনি ক্ষিপ্ত হন। এর পর গত শনিবার দিবাগত রাতে রাস্তার কাজে ব্যবহৃত এস্কাভেটর ভাঙচুর করেন মোজাম্মেল হক (৫৫) ও তাঁর ছেলে বাদল হোসেন (৩০)। এর পরের দিন গতকাল রোববার বিকেলে খবর পেয়ে জাগীর দিঘুলিয়া গ্রামে এস্কাভেটরের মালিক ও ঠিকাদার বিপ্লব হোসেন বাতেন এস্কাভেটর দেখে নিজ বাড়ির উদ্দেশে যাচ্ছিলেন।
হাসপাতালে চিকিৎধীন বিপ্লব হোসেন বাতেন বলেন, একটি কাজের বিল বাবদ ৪৫ হাজার টাকা নিয়ে বাড়ি যাচ্ছিলেন। পথে তিনি শুনতে পান তাঁর এস্কাভেটর ভাঙচুর করা হয়েছে। পরে তিনি এস্কাভেটর দেখে মোটরসাইকেলে করে বাড়ি যাচ্ছিলেন। বাড়ির সামনে যেতেই চলন্ত মোটরসাইকেলে তাঁকে লোহার রড দিয়ে কোমড়ে আঘাত করে বাদল হোসেন। এতে তিনি মাটিতে পড়ে যান। এর পর তাঁর সঙ্গে থাকা মোজাম্মেল হক, নাসির উদ্দিন লেবু, জহিরুল ইসলাম টুকুসহ অজ্ঞাত আরও সাত-আটজন যুবক তাঁকে লোহার রড ও লাঠিসোটা দিয়ে পেটাতে থাকে। এতে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লে হামলাকারী চলে যান। পরে স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
তিনি দাবি করেন, এস্কাভেটর ভাঙচুর তাঁর তিন লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। হামলায় তাঁর সঙ্গে থাকা টাকাও লুট করে নিয়ে গেছেন হামলাকারীরা।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নূর আলম বলেন, জনগণের চলাচলের জন্য সরকারি রাস্তাটি নির্মাণ করা হচ্ছে। তবে মাত্র তিন ফুট জায়গার জন্য এলাকার দুই-তিনজন ব্যক্তি বাধা দেন। নির্মাণকাজের সঙ্গে যুক্ত ঠিকাদারকে পরিকল্পিতভাবে হামলা করে গুরুতর আহত করা হয়েছে।
স্থানীয় ইউপির ৭, ৮ এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী সদস্য রাফিজা আক্তার বলেন, রাস্তাটি নির্মাণ হলে আশপাশের চার থেকে পাঁচটি গ্রামের মানুষের চলাচল করতে পারবে। সরকারি কাজে বাধা ও হামলার ঘটনায় দোষীদের শাস্তি দাবি করে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে এলাকার ৫০০ মানুষ গণসাক্ষর দেবে।