নিজস্ব প্রতিবেদক: মানিকগঞ্জ জেলার বিভিন্ন এলাকায় আমন ধান কাটা শুরু হলেও হাসি নেই কৃষকের মুখে। কৃষকদের অনেকেই আবার ধান কেটে জমি তৈরি করছেন সরিষা বা মুড়িকাটা পিঁয়াজ চাষের জন্য। তবে ধানের ফলন ভাল না হওয়ায় লোকসানের শঙ্কায় রয়েছে উপজেলার কয়েক হাজার কৃষক।
জেলার চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন উপজেলায় ফসলের মাঠ ঘুরে দেখা যায়, কৃষকেরা ধান কাটার জন্য নিজে এবং রোজ হিসেবে দিন মুজুর নিয়েছেন। অনেকে আবার পুরো ক্ষেত চুক্তিতেও ধান কাটাচ্ছেন।
কৃষকরা জানান, এবার বর্ষায় মৌসুমে পানি কম হওয়ায় এ বছর বোনা আমনের ফলন আশানুরূপ হয়নি। যা হয়েছে তাতে দিন মুজুরের খরচ দিয়ে লোকসানের আশঙ্কা তাদের।
হরিরামপুর বয়ড়া ইউনিয়নের চাষী গইজদ্দীন জানান, দুই বিঘা জমিতে আমন ধান বপন করেছিলাম। পানি কম হওয়ায় এবার ফলন ভালো হয়নি। নিজে না কাটলে খরচ উঠবে না। তাই নিজেই কাটতেছি। কামলা নিলে লোকসান হইবো।
আরেক চাষী সাহিদ খাঁ জানান, “তিলের মধ্যে আমন চাষ করেছিলম। তিল ভাল হইছিলো। তয় পানির কারণে আমন ধান কম হইছে।”
শিবালয় উপজেলার আরুয়া ইউনিয়নের কৃষক আকরাম হোসেন জানান, আমি এ বছর চার বিঘা জমিতে আমন বপন বুনছি। কিন্তু পানি কম হওয়ায় ধান ভাল হয়নি। সার আর দিন মুজুর খরচ যে হারে লাগে তাতে আমার লোকসান হবে। কারণ দুই বিঘা জমিতে সর্বোচ্চ ১২/১৪মণ ধান হবে। এতে খরচ উঠবোনা।
ঘিওর উপজেলার শোলধারা গ্রামের হারুন অর রশিদ জানান, আমি ছয় বিঘা জমিতে বোনা আমন বপন করেছি। ফলন মোটামুটি ভালো হইছে। তবে যে হারে খরচ হয়েছে তাতে খরচের টাকা হয়তো উঠবে কিন্তু
লাভ হবে না। ফলন যা হইছিল তাতে বর্ষার পানি যদি আরও কিছু দিন থাকলে আরও ভালো ফলন হতো। আমাদের এলাকায় ভরপুর একটা বর্ষা দরকার।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণের উপপরিচালক মো. এনায়েত উল্লাহ বলেন, জেলায় চলতি বছরে বোনা আমনের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ২৬,হাজার হেক্টর জমি। তবে আবাদ ২৫ হাজার ৫শত হেক্টর হেক্টর জমিতে হয়েছে। আর রোপা আমনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১০ হাজার ২ হেক্টর হেক্টর জমিতে। আবাদ হয়েছে ১১ হাজার ৫ শত হেক্টর জমিতে। তবে পানি একটু কম হলেও আমাদের যে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা আছে, তা পূরণ হবে আশা করি। আর কৃষক যাতে ধানের বীজ, সার ঠিক মতো পায় সে জন্য আমাদের যথেষ্ট তদারকি ছিল।