পুত্রবধূর পরকীয়া বাধা দেওয়ায় শাশুড়িকে খুন

স্টাফ রিপোর্টার: শাশুড়ি হায়াতুননেছা (৬৫)কে হত্যা করে পুত্রবধূ ও তার প্রেমিক লাশ রেখে দেয় নিজ ঘরে একটি স্টিলের ট্রাংকে। পুত্রবধূর পরকীয়াতে বাধা দেওয়ায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটে বলে জানা গেছে। হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে পুত্রবধূ রুনা বেগমের (২৫) প্রেমিক সবুজ মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে সিংগাইর থানা পুলিশ।

নিহত হায়াতুন নেছা সিংগাইর পৌরসভার নয়াডাঙ্গী গ্রামের মাহামুদ কাজীর স্ত্রী। অপরদিকে পুত্রবধূর প্রেমিক সবুজ হোসেন টাঙ্গাইল জেলার গোপালপুর থানার শ্যামনগর গ্রামের নুরুল ইসলামের ছেলে।

গত ৬ অক্টোবর রাতে নিজ ঘরে হায়াতুননেছার লাশ পাওয়া যায় কাপড় রাখার বড় একটি স্টিলের ট্রাংকের ভেতরে। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে সৌদি প্রবাসী কাজী আব্দুল খালেকের স্ত্রী রুনা বেগম ও তার মা রেনুকা বেগমকে স্থানীয়রা আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন। ঐ রাতেই লাশ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায় পুলিশ।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, নয়াডাঙ্গী গ্রামের প্রবাসী আব্দুল খালেকের মা হায়াতুননেছা ও তার স্ত্রী রুনা বেগম নিজ বাড়ির এক’তলা বিল্ডিংয়ে বসবাস করে আসছিলো। মাঝে মধ্যে স্ত্রী রুনা বেগম না বলে অন্যত্র চলে যায়। এ নিয়ে শাশুড়ির সাথে কথা কাটাকাটি হয়। ঘটনার আগের দিন থেকে শাশুড়ি নিখোঁজ হন। এদিকে রুনা বেগম সকালে বাড়ি থেকে উপজেলার ধল্লা এলাকার বাবার বাড়ি চলে যান। বাড়ি ফাঁকা থাকায় আত্মীয় স্বজন হায়াতুননেছাকে খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। সন্ধ্যার পর রুনা তার মা রেনুকাকে নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে ফিরলে প্রতিবেশী ও আত্মীয় স্বজনের জিজ্ঞাসার এক পর্যায় ট্রাংকের ভিতর হায়াতুন নেছার লাশ দেখতে পায়।

এ ঘটনায় নিহত হায়তুননেছার ভাতিজা মো. নিয়ামত বাদি হয়ে ওই প্রেমিক সবুজ, গৃহবধূ ও তার মায়ের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনের নামে থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলায় তাদের দুইজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এরপর কাফরুল এলাকা থেকে সবুজকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এদিকে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আসামি সবুজ আদালতে হাজির করলে বিচারকের কাছে তিনি হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত বলে স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।

আসামি সবুজের ভাষ্যমতে, রুনা বেগমের সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কের কথা জানার পর থেকেই বাধা দিয়ে আসছিল হায়াতুননেছা। ঘটনার দিন বাড়িতে হায়াতুননেছাকে সবুজ মেঝেতে বসা অবস্থায় পেয়ে পেছন থেকে নাক মুখ ও সজোরে চেপে ধরেন। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করে সবুজ লাশ গুম করার জন্য একই ঘরে স্টিলের ট্রাংকে মধ্যে লাশ লুকিয়ে রাখেন। পরে তিনি ওই গৃহবধূর সাথে রাত্রি যাপন করে পরের দিন ওই বাড়ি থেকে চলে যান।

Scroll to Top