বাজেট বাস্তবায়নে গতি বাড়ানোর নির্দেশ

স্টাফ রিপোর্টার: চলতি অর্থবছরের বাজেট সময়মতো ও সুষ্ঠু বাস্তবায়ন এখনো প্রধান চ্যালেঞ্জ বলে মনে করে অর্থ মন্ত্রণালয়। আয়-ব্যয়ে ভারসাম্যহীনতার প্রধান কারণ হলো রাজস্ব আহরণ ও অর্থ ব্যয়ে সুষ্ঠু পরিকল্পনা না থাকা। অর্থবছরের তিন মাস পার হলেও বাজেট বাস্তবায়ন পিছিয়ে আছে। এখন থেকে প্রান্তিকভিত্তিক আয়-ব্যয় পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করতে হবে। এজন্য বাজেট বাস্তবায়নে গতি বাড়াতে নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি অর্থ বিভাগ থেকে জারিকৃত ‘বাজেট বাস্তবায়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন অগ্রগতি পরিবীক্ষণ’ শীর্ষক এক পরিপত্রে এসব বলা হয়েছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ বলেছে, দক্ষতা, সক্ষমতা, রাজস্ব আহরণ ও সরকারি অর্থ ব্যয়ের ক্ষেত্রে সুষ্ঠু পরিকল্পনার অভাবই পরিপূর্ণভাবে বাজেট বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বড় বাধা। এ অবস্থায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোকে বাজেট বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বেশ কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অর্থ বিভাগের তথ্যে জানা গেছে, বছরভিত্তিক লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণে মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠান যথেষ্ট দক্ষতা অর্জন করলেও সময়মতো ও সুষ্ঠু বাজেট বাস্তবায়ন এখনো একটি প্রধান চ্যালেঞ্জ। বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের বাজেট বাস্তবায়ন সাধারণত অর্থবছরের প্রথমদিকে ধীরগতিতে চলে। একইভাবে অর্থবছরের শুরুতে রাজস্ব আদায়ে ধীরগতি আছে।

পরিপত্রে বলা হয়েছে, বছরের প্রথমদিকে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতা ছাড়া অন্য সব বিষয়ের বিপরীতে ব্যয়ের পরিমাণও কম। বিশেষ করে বিভিন্ন ইউটিলিটি বিল পরিশোধ, মেরামত সংরক্ষণ, নির্মাণ ও পূর্ত কাজ এবং মালামাল সংগ্রহের ক্ষেত্রে অর্থবছরের শেষদিকে পদক্ষেপ নেওয়া হয়। ফলে অনেক ক্ষেত্রে সরকারি ব্যয়ের গুণমান নিশ্চিত করা সম্ভব হয় না। বছরের শেষে সরকারকে অপরিকল্পিত ঋণের দায়ভার গ্রহণ করতে হয়। ফলে আর্থিক শৃঙ্খলা নিশ্চিত করা যায় না। এ অবস্থায় বাজেট সুষ্ঠুভাবে ও সময়মতো বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আগাম পরিকল্পনা গ্রহণ এবং তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হলে অপরিকল্পিত সরকারি ঋণ এড়ানো এবং সরকারের ঋণজনিত ব্যয় কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।

এ পরিস্থিতিতে বাজেট সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে অর্থবছরের শুরুতেই প্রান্তিকভিত্তিক (তিন মাস) পরিকল্পনা গ্রহণ, যথাযথভাবে বাস্তবায়ন এবং বাজেট ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে অগ্রগতি পরিবীক্ষণের জন্য প্রত্যেক মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ। এ লক্ষ্যে মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোকে অক্টোবরের মধ্যে তাদের বাজেট বাস্তবায়ন পরিকল্পনা অর্থ বিভাগে পাঠাতে বলা হয়েছে। পরিকল্পনা প্রণয়ন ও প্রতিবেদন তৈরিতে বিভিন্ন ফরমও তৈরি করে দিয়েছে অর্থ বিভাগ। এছাড়া প্রত্যেক প্রান্তিক শেষ হওয়ার পরবর্তী এক মাসের মধ্যে বাজেটের এ প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

বাজেট ও অর্থ বিভাগের তথ্য-উপাত্ত পর্যালোচনায় দেখা যায়, সাধারণভাবে কোনো অর্থবছরেই পুরো বাজেট বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় না। এমনকি সংশোধিত বাজেটও পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয় না। গত পাঁচ বছরে মূল বাজেটের গড়ে ৮১ শতাংশ এবং সংশোধিত বাজেটের গড়ে ৮৭ শতাংশ বাস্তবায়িত হয়েছে।

Scroll to Top