স্টাফ রিপোর্টার: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে হত্যা-গণহত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলার বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শুরু হচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার থেকে।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টা থেকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারকাজ শুরুর কথা রয়েছে।
এ দিন আসামিদের বিরুদ্ধে কয়েকটি আবেদন করবে রাষ্ট্রপক্ষ। চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এ আবেদনগুলো করবেন বলে জানা গেছে। তিনি বলেন, জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় গণহত্যার ঘটনায় করা মামলার বিচার করতে নিয়োগ পাওয়া ট্রাইব্যুনালের তিন বিচারপতি যোগ দিয়েছেন।
সম্প্রতি বিচারপতিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম বলেছিলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় যারা মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছে তাদের বিচার অগ্রাধিকার পাবে।
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের বিচারের মুখোমুখি করতে ২০১০ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠন করে। সেই ট্রাইব্যুনাল জামায়াত-বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতার বিরুদ্ধে দণ্ড ঘোষণা করা হয় এবং তা কার্যকরও হয়।
এর মধ্যেই গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে পতন ঘটে আওয়ামী লীগ সরকারের। ছাত্র-জনতার আন্দোলন ঠেকাতে আওয়ামী লীগ সরকার নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ চালায়। প্রায় দেড় হাজার মানুষ প্রাণ হারায় এই আন্দোলনে। হাসিনা সরকারের ১৫ বছরের শাসনের অবসানের পর শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব নিলে জুলাই-আগস্টের গণহত্যার বিচার করার সিদ্ধান্ত হয়।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগ সরকারের হাতে গঠিত এ ট্রাইব্যুনালেও পরিবর্তন আনা হয়। গতকাল বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারকে প্রধান করে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল পুনর্গঠনের অনুমোদন দেয় আইন মন্ত্রণালয়। ট্রাইব্যুনাল চেয়ারম্যান এবং সদস্যরা ১৫ অক্টোবর বিচারিককাজে যোগ দেন।
ছাত্র আন্দোলনের সময় কয়েকশ মৃত্যুর ঘটনাকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে বিবেচনা করে শেখ হাসিনাসহ ক্ষমতাচ্যুত সরকারের কয়েক ডজন মানুষের বিরুদ্ধে বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে এরইমধ্যে বেশ কিছু অভিযোগ জমা পড়েছে। বিচারকাজ শুরু হলে সেগুলোর ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া ট্রাইব্যুনালে বিচারকাজ শুরু হলে শেখ হাসিনাসহ পলাতক আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা চাওয়া হবে।