স্টাফ রিপোর্টার: নিম্নচাপের প্রভাবে ভারী বৃষ্টি এবং ভারতের উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে ফেঁপে উঠেছে পদ্মা। ইতিমধ্যে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকে পড়ায় কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের চার ইউনিয়নের পদ্মার চরের অন্তত ৩৪টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। ভাঙন ও বন্যার আশঙ্কায় দিন কাটাচ্ছে তারা।
এদিকে চিলমারী ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। তলিয়েছে যাতায়াতের রাস্তা। ডুবেছে মরিচা, ফিলিপনগর, রামকৃষ্ণপুর ও চিলমারী এলাকার চরের ফসল ও আবাদি জমি। এর আগে আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে নদীতে পানি বাড়লেও শেষের দিকে কমতে শুরু করে। তবে, ফের পানি বাড়তে শুরু করে সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময় থেকে।
পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবোর) ওয়াটার হাইড্রোলজি বিভাগের তথ্যমতে, সোমবার সকাল ৯টা থেকে বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত দুই দিনে নদীতে পানি বেড়েছে ২৩ সেন্টিমিটার। পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে বুধবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত পানি প্রবাহিত হচ্ছিল ১২ দশমিক ৩৪ সেন্টিমিটার, যা বিপৎসীমার ১ দশমিক ৪৬ সেন্টিমিটার নিচে। এই পয়েন্টে বিপৎসীমা ধরা হয়েছে ১৩ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন পাবনা ওয়াটার হাইড্রোলজি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল করিম।
এদিকে চিলমারী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান বলেন, আমার ইউনিয়নের প্রায় ১৮টি গ্রামের আশপাশে পানি চলে এসেছে। চলাচলের রাস্তার ওপরে পানি উঠে গেছে। তবে, এখনো বসতঘরে পানি প্রবেশ করেনি। চরের আবাদি জমি সব ডুবে গেছে
রামকৃষ্ণপুর ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজ মন্ডল জানান, রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়ন ১৬টি গ্রামের চারপাশে পানি চলে এসেছে। তাদের ইউনিয়নের পদ্মার চরের প্রায় সব আবাদি জমি তলিয়ে গেছে। এতে মাষকালাই চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
চরে পানিবন্দী হয়ে পড়া প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রমের বিষয়ে খোঁজ নিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চরের কয়েকটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। পরিস্থিতির অবনতি হলে তা পর্যায়ক্রমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে, মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো এখনো স্বাভাবিক আছে।
চরে প্লাবিত হওয়া কৃষিজমির ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেড়েছে। এ বিষয় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার নুরুল ইসলাম বলেন, পদ্মায় পানি বাড়ার কারণে, এখন পর্যন্ত চার ইউনিয়নের অন্তত ১০০ হেক্টর জমির মাসকালাই ডুবে যাওয়ার খবর পেয়েছি। এবার চরে ২ হাজার ৩২৩ হেক্টর জমিতে মাসকালাই চাষ হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ওবায়দুল্লাহ বলেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি আছে। আমরা পানিবন্দী হয়ে পড়া এলাকাগুলোর খোঁজ রাখছি।