চোখ রাঙাচ্ছে পদ্মা, আতঙ্কে নদীপাড়ের মানুষ

স্টাফ রিপোর্টার: ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পানিতে গত কয়েকদিনে ফের বৃদ্ধি পেয়েছে পদ্মার পানি। এতে আতঙ্কিত কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার পদ্মাপাড়ের মানুষ।

এর আগে আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে নদীতে পানি বাড়লেও শেষের দিকে পানি কমতে শুরু করে। তবে ফের পানি বাড়ায় বন্যার আশঙ্কায় রয়েছেন নদী ঘেঁষা উপজেলার ৪ ইউনিয়নের বাসিন্দারা। ইতিমধ্যে চরের বেশকিছু আবাদি জমির মাসকালাইসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

তবে পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের ওয়াটার হাইড্রোলজি বিভাগ বলছে মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত পানি বৃদ্ধি পাবে পদ্মায়। পরে তা স্থিতিশীল থেকে আবার কমতে শুরু করবে। এতে বন্যা হওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখছেন না তারা।

তাদের দেওয়া তথ্য বলছে, পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ৩ ঘণ্টায় ২ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। সকাল ৯টা পর্যন্ত এখানে পানি প্রবাহিত হচ্ছিল ১২ দশমিক ১১ সেন্টিমিটারে, যা বিপদসীমার ১ দশমিক ৬৯ সেন্টিমিটার নিচে। এই পয়েন্টে বিপদসীমা ধরা হয়েছে ১৩ দশমিক ৮০ সেন্টিমিটার।

এদিকে ফের পদ্মা নদীর পানি বাড়ায় নদী তীরবর্তী মানুষ অসময়ে বন্যার আশঙ্কা করছেন। উপজেলার চিলমারী, রামকৃষ্ণপুর, মরিচা ও ফিলিপনগর-এই ৪ ইউনিয়নের পদ্মাপারের মানুষ বন্যায় বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ইতিমধ্যে পানিতে তলিয়েছে চরের আবাদি ফসলের মাঠ।

উপজেলার চিলমারীর ইউপি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আবদুল মান্নান বলেন, নদীর আবার পানি বৃদ্ধি পেয়েছে তবে, তা লোকালয়ে এখনো প্রবেশ করেনি। কিছু নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকেছে। প্রায় ১০০ একরের মতো মাসকালাই ডুবে গেছে। অনেকে পেঁয়াজ চাষের জন্য জমি প্রস্তুত করছিলো, সেগুলোও এখন পানির নিচে।

রামকৃষ্ণপুর ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজ মণ্ডল বলেন, নদীতে পানি কমে গিয়ে ফের পানি বাড়তে শুরু করেছে। তবে এখনও ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়নি।

চরে প্লাবিত হওয়া কৃষি জমির ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণের বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার নুরুল ইসলাম বলেন, পদ্মায় পানি বৃদ্ধির ফলে ৪ ইউনিয়নের প্রায় ৩২ হেক্টর জমির মাসকালাই ডুবে গেছে। এবার চরে ২ হাজার ৩২৩ হেক্টর জমিতে মাসকালাই চাষ হয়েছে।

এ বিষয়ে পাবনা ওয়াটার হাইড্রোলজি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী রেজাউল করিম বলেন, পদ্মা নদীর হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে সোমবার সকালে ৯টা পর্যন্ত পানির প্রবাহ ছিল ১২ দশমিক ১১ সেন্টিমিটার, যা বিপদসীমার ১ দশমিক ৬৯ সেন্টিমিটার নিচে।

তিনি আরও বলেন, মঙ্গলবার পর্যন্ত পানি বৃদ্ধি পাবে। এরপরে তা স্থিতিশীল থেকে আবার কমতে শুরু করবে। এতে বন্যা হওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।

Scroll to Top