স্টাফ রিপোর্টার: কুষ্টিয়া-পাবনা মহাসড়ক থেকে পদ্মা নদীর দূরত্ব এখন মাত্র ৪০ মিটার। মহাসড়কে দেখা দিয়েছে ভাঙনের শঙ্কা। যেকোনো মুহূর্তে উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়তে পারে। কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার বাহিরচর ইউনিয়নের ১২ মাইল, মসলেমপুর ও মুন্সিপাড়ায় পদ্মা নদীর ভাঙন ঠেকাতে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে প্রায় প্রতিদিনই অবরোধ করছে এলাকাবাসীরা।
এলাকাবাসীর সূত্রে জানা যায়, প্রতিবছরের মতো এবারও পদ্মার ভাঙনের কবলে পড়েছে ভেড়ামারার ৫টি ইউনিয়ন। চরম আতঙ্কে দিন কাটছে এসব এলাকার হাজারো মানুষের। গত এক মাসে নদীতে বিলীন হয়ে গেছে কয়েক শত-শত একর ফসলি জমি। উপজেলার বাহিরচর ইউনিয়নের ১২ মাইল, মসলেমপুর ও মুন্সিপাড়ায় পদ্মা নদীর ভাঙন দিন দিন তীব্র আকার ধারণ করেছে। প্রমত্ত পদ্মা নদীর তীব্র ভাঙনে কুষ্টিয়া-পাবনা মহাসড়কও হুমকির মুখে রয়েছে। ভাঙনে কৃষি জমি, ঘরবাড়ি, রাস্তা, ইটভাটা ও বাঁধ নদীতে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে ভাঙন থেকে বাড়িঘর ও ফসলি জমি রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে কুষ্টিয়া-পাবনা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয়রা আরও জানান, উপজেলার সাহেবনগর এলাকায় কুষ্টিয়া-পাবনা মহাসড়ক থেকে নদী এখন মাত্র ৪০ মিটার দূরে আছে। সড়কটি যেকোনো সময় ভাঙনের কবলে পড়তে পারে। এছাড়াও পদ্মা নদীর ভাঙনে বিলীন হয়েছে বিদ্যুতের জাতীয় গ্রিডের একটি টাওয়ার।
কৃষক হাসান আলি বলেন, আমার বাড়ির সামনেই পদ্মা নদীর ভাঙনে জাতীয় গ্রিডের একটি টাওয়ার নদীতে ভেঙে পড়ে। হুমকির মুখে আছে নদীতীরবর্তী বসতবাড়ি, ফসলি জমি, কুষ্টিয়া-পাবনা মহাসড়কসহ বিদ্যুতের আরও কয়েকটি টাওয়ার। এমন পরিস্থিতিতে চরম উৎকণ্ঠায় দিন পার করছি।
এদিকে টাওয়ার ভাঙার পরপরই কুষ্টিয়া-পাবনা মহাসড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ করেন গ্রামবাসী। এতে সড়কের উভয় পাশে প্রায় ২ কিলোমিটার যানবাহন আটকা পড়ে।
কুষ্টিয়ার বটতৈল গ্রিডের প্রকৌশলী আবু তালেব বলেন, ভেঙে পড়া টাওয়ারে কয়েক দিন আগে থেকেই বিদ্যুৎ সঞ্চালন বন্ধ ছিল। এই লাইন দিয়ে ভেড়ামারা থেকে ফরিদপুরে বিদ্যুৎ আনা-নেওয়া করা হয়। ভেঙে পড়ায় বিদ্যুৎ সঞ্চলনে তেমন কোনো প্রভাব পড়বে না। বিকল্প লাইনে বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক আছে।
কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশিদুর রহমান বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে দেড় থেকে দুই মাসের মধ্যে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু হবে। টানা বৃষ্টিতে নদীর পানি ২ থেকে ৩ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। এছাড়াও নদীর গতিপথ পরিবর্তন ও দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে ওই এলাকায় ভাঙন তীব্র হয়েছে। আমরা ব্যাপারটি অবজারভেশনে রেখেছি। কয়েকবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি।
ভেড়ামারা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিজানুর রহমান বলেন, উপজেলার বাহিরচর ইউনিয়নের ১২ মাইল, মসলেমপুর ও মুন্সিপাড়ায় পদ্মা নদীর ভাঙন তীব্র আকার ধারণ করেছে। নদীভাঙন নিয়ে প্রায় দিনই সেখানে আন্দোলন হচ্ছে। স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানানো হয়েছে।