একুশ সাম্প্রতিক : একুশের কবিতা

সাংস্কৃতিক ডেস্ক:

কবিতার নাম: একুশ সাম্প্রতিক
লিখেছেন: সিয়ামুল হাসান, শিক্ষার্থী, ইংরেজি বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।

নিশাকরের ঘুম ভেঙে জেগে উঠা বাংলার শিকড়,
প্রভাতের বিভাবসুর রক্তিম কর।

আজকের পুলক,পুলকিত সব,মধুময় এ মহীর,
স্বাধীন সদন, ভূধর,বিপিন
রক্তে ভেজা বাংলা
এ উছিলা উপহার দেয়া সব সাহসী বিপ্লবীর।

৫২ এর আগে থেকেই
সিংহের মত গর্জে উঠা শহীদ,ভাসানী, শেরে বাংলা
সাহসী বঙ্গবন্ধু আর তিতুমীরের বাঁশের কেল্লা।

বীরদের নীলয় থেকে বিদায় বেলায়,
সদ্যশিশুর আঙুল থেকে আঙুল সরিয়ে নেয়া,
কঠিন লৌহ আত্নাদেরই জানা,
পাথরের নিচের গহন নীশিথের কান্না।
কত নীরদ, কত বেদনা,
কত কঠিন বাস্তবতা,
ছিড়ে ফেলে মায়ার টান,
কাধে ঝুলিয়ে মেশিনগান!

নিশ্চিত মৃত্যু বুকে নিয়ে অনিশ্চিত যাত্রা,
শুধু পৃথিবীর ইতিহাসে একটি স্বাধীন মানচিত্র থাকবে ভেবে,
আর একটি পতাকা শব্দ করে শূন্যে উড়বে বলে।
সমস্ত পুজিবাদি নিয়ম ভাঙবে ভেবে,‌
পশ্চিমাদের রুখবে বলে,
আলয় থেকে বেড়িয়ে পড়া অন্ধকারে,
লোমহর্ষক কূহকের চিৎকারে ,
হৃৎপিণ্ডের গহীনে নিশীথের ভয়ে শিউরে উঠা,
শিরার ভেতর জমে থাকা
জমাটবাঁধা গাঢ় নীলোম্বু।

তবুও ভয়ের ঊর্ধ্বে বীর।

তবে তারা জানতেন না এদেশের পেছনে,
এখনো কতশত পরজীবীর স্বার্থ আছে।

নারী,শিশু, মায়ের শোকগীতি
অযোদ্ধাদের নিবন্ধন স্বজনপ্রীতি।

কি আর বলব এই ভার্চুয়াল কলম যোদ্ধাদের যুগে,
স্মার্ট যুগের প্রত্যয়ে-
পুজিবাদের শহরে জন্ম আমার,
যাক সব মরে যাক,
আমি তো ভালো আছি!

বেনিয়ারা তো দূরে থাক
এ জাতি জানুক!
বেড়ালের নরম থাবায়ও তারা টিকবে না।

পান্তা ইলিশের পহেলা,গোলাপের ভ্যালেন্টাইন,
লাল-সবুজ শাড়ী-পাঞ্জাবীর একুশ।
এ যুগের ছেলেমেয়েরা বিলাসিতায় বেহুশ।

কি আর বলব এ আরাম প্রিয়তার যুগে!
পালিত প্রতিটি অভিনয় অযামিনী
ভার্চুয়াল সভা-সমিতি,মিছিল-মিটিং
অফিস ,প্রেস,ক্লাব,ক্লাস,
দানবের ছিনিয়ে নেওয়া আজ্ঞাবহ দাস।

এখন আর ভঙ্গ হয় না ১৪৪ ধারা,
গ্রেফতার, লাঠিচার্জ, কাঁদানোগ্যাস ছাড়া।

সেই রক্তিম গোলাপের রাজপথ,

২১এর ভোরে শান্তসবুজ গালিচায় মিছিলরথ।

তবে ৫২-র ২১ আর শেষ ১৪ ই এর মত
এখনো লেখা হয় অল্প
বেলা ফুরাবার গল্প
এই বাংলায়, শেরে বাংলার আবরারের মত।

লোকদেখানো আবেগ,
মিথ্যে দহনে পুড়ে বিবেক।
শেষে বিড়াল পোষ্য বাঘ
শোষিতের জমে থাকা রাগ।

বারীন্দ্রের পবনে ভেসে আসা শহীদের কান্নায়,
অম্বুদের নীরের মত ছড়িয়ে পরে আমার বাংলায়।

দিবস কি আসলেই আত্নচেত্মায় লালিত হয়,
নাকি শুধুই আনুষ্ঠানিকতায়?

Scroll to Top