সত্য সংবাদ ডেক্স: স্কুল ফাঁকি দেওয়া সেই আদিকাল থেকেই হয়ে আসছে। কিন্তু বিষয়টি যখন অভ্যাসে পরিণত হয় তখন তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দেয়। দিনের পর দিন স্কুল-কলেজে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ক্লাসে অনুপস্থিত থাকছে অনেকেই। এই সময় বিভিন্ন রেস্টুরেন্ট কিংবা নির্জন স্থানে বন্ধুর সঙ্গে তারা মত্ত হচ্ছে আড্ডায়।
মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে পদ্মার পাড় সহ বিভিন্ন স্থানে বাড়ছে শিক্ষার্থীদের আনাগোনা। কলেজ কিংবা স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা বন্ধু ও বান্ধবীকে নিয়ে পদ্মায় একান্ত সময় কাটানোর পর ফিরে যাচ্ছে বাড়িতে।
অভিবাবকগণ কোনভাবেই বুঝতে পারছে না তাদের সন্তান স্কুল কিংবা কলেজ ফাঁকি দিচ্ছে। গত কয়েকদিন সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, হরিরামপুর উপজেলার কুশিয়ারচর (কালিতলা) নামক পদ্মা নদীতে নৌকায় ঘনিষ্ঠভাবে পাশাপাশি বসে আছেন ঝিটকা খাজা রহমত আলী কলেজের ইউনিফর্ম পরা কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রী।
এখানে যারা ঘুরতে আসে তাদের বেশির ভাগই স্কুল বা কলেজ ফাঁকি দিয়ে। ইউনিফর্ম পরা স্কুল-কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের ঘোরাঘুরির নামে আপত্তিকর আচরণে চরম বিব্রত হচ্ছেন পদ্মায় আসা সচেতন ব্যক্তিরা।
বিশেষ করে একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ইউনিফর্ম পরেই সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মেতে উঠছে আড্ডায়। দলে দলে তারা আড্ডা দিতে গিয়ে জড়িয়ে পড়ছে নানা ধরনের অপরাধ কর্মকাণ্ডে। প্রকাশ্যে ধূমপানও করছে নানা বয়সি মানুষের সামনে। ছেলেমেয়েরা হাত ধরে ব্যস্ত ঘুরাঘুরিতে। বসছে ঘনিষ্ঠভাবে। একে অপরকে জড়িয়েও ধরছে প্রকাশ্যে। উঠতি বয়সী এমন শিক্ষার্থীদের আচরণকে দৃষ্টকটু হিসেবে দেখছে সচেতন মহল।
সরজমিনে গিয়ে কথা হয় পদ্মার পাড়ে ঘুরতে আসা সোলাইমান নামের একজনের সাথে তিনি বলেন, এখানে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ ঘুরতে আসেন। কিন্তু দেখছি শিক্ষার্থীরা ক্লাস ছেড়ে এখানে এসে আড্ডা দিচ্ছে। ভর-দুপুরে শিক্ষার্থীদের স্কুলে থাকার কথা থাকলেও আড্ডা দিচ্ছে বন্ধুদের সঙ্গে।
স্থানীয় ওমর ফারুক ও সুজন বলেন, এখানে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বেড়াতে এসে লজ্জার মধ্যে পড়ছে অনেকেই। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিষয়টি দেখা উচিত। সবাই যেন এখানে বেড়াতে এসে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। এছাড়া ঘাট থেকে নৌকায় চড়ে পদ্মার মাঝে জেগে ওঠা চরে যাচ্ছে। সেখানে নির্জন স্থানে মাদক সেবন ও বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত হচ্ছে এরা। এদের মধ্যে ঝিটকা খাজা কলেজের পোলাপান বেশি ঘুরতে আসে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত খাজা কলেজের পোলাপাইন বেশি দেখা যায়।
এ বিষয়ে কয়েকজন অভিভাবকের সাথে কথা বললে তারা বলেন, আমার বাচ্চা কোথায় যাচ্ছে স্কুলে আসছে কি না এটা দেখার আমাদের যেমন দায়িত্ব আছে স্কুল কর্তৃপক্ষেরও তো একটা দায়িত্ব আছে। স্কুল কর্তৃপক্ষ যদি এই বিষয়গুলো বিবেচনা করে তাহলে তো কোনো বাচ্চারা বাইরে যাওয়ার কথা না।
ঝিটকা খাজা রহমত আলী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মোঃ সহিদুর রহমান বলেন, কলেজের ভাবমূর্তি যেন নষ্ট না হয় সেক্ষেত্রে আমরা আগামীকাল থেকে বিষয়টি দেখবো।
হরিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহ্ নূর এ আলম বলেন, আমরা নজরদারি রেখেছি যেন শিক্ষার্থীরা ক্লাস ছেড়ে পদ্মা পারে আড্ডা দিতে না পারে।
এ ব্যাপারে হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহরিয়ার রহমান বলেন, আমরা একটা সার্কুলার জারি করবো। প্রত্যেকটা কলেজের শিক্ষার্থীদের আমরা নোটিশ দিয়ে দিবো। আজকের মধ্যে সার্কুলার জারি করে আমরা ব্যবস্থা নিবো।