মোবাইল কোর্টে বন্ধের পরদিনই ফের সচল অবৈধ ৬ ইটভাটা

মোবাইল কোর্টে বন্ধের পরদিনই ফের সচল অবৈধ ৬ ইটভাটা

আর মাহমুদ, মানিকগঞ্জ: বুধবার (৩১ জানুয়ারী) সকাল ১১টা থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া ভাটাগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, মোবাইল কোর্টে ইটভাটার সামান্য কিছু অংশ ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে। ভেঙ্গে দেয়া ওই স্থানটুকু নতুন করে ইট-সিমেন্ট দিয়ে মেরামত করছে ভাটা মালিকেরা। একইসাথে পুরোদমে চলছে ইট প্রস্তত ও পোড়ানোর কার্যক্রম। কোনো শ্রমিক ইট তৈরি করছে। কেউ মাটি ভাঙছে। কোনো শ্রমিক ব্যস্ত চুল্লির ভেতর আগুন দিতে। কিছুক্ষণ পরপর মাটি নিয়ে ঢুকছে ট্রাক। দেখে বুঝার কোনো উপায় নেই যে, একদিন আগেও এই ইটভাটায় অভিযান চালিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।

বিষয়টি নিয়ে ভাটা মালিকেরা জানান, আমরা ডিসি অফিসে ও পরিবেশ অধিদপ্তরে লাইসেন্স নবায়নের জন্য আবেদন করেছি, কিন্তু এখনো সেগুলো পাইনি। এরমধ্যেই পরিবেশ অধিদপ্তর মোবাইল কোর্ট করে ভাটার কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্ত এখানে আমাদের কোটি কোটি টাকার ব্যবসা। বললেই তো আর বন্ধ করা যায়না। 

অপরদিকে আব্দুল্লাহ আল সোবহান ব্রিকসের মালিক মো: শফিকুল ইসলাম জানান, যেসব ভাটা স্কেভেটর দিয়ে ভেঙ্গে দিয়েছে সেগুলোতে এক লাখ টাকা কম জরিমানা করেছে। আমারটা ভাঙেনি, তাই এক লাখ টাকা বেশি জরিমানা করেছে।

নানাভাবে অবৈধ প্রভাব খাটিয়ে ফের চালু করা এসকল অবৈধ ইটভাটা স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়ার দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল। 

বন্ধ করে দেয়া অবৈধ ইটভাটাগুলো ফের চালু করার বিষয়ে জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ডাঃ মোঃ ইউসুফ আলী বলেন, বন্ধ করে দেয়া ভাটাগুলো ফের কার্যক্রম শুরু করলে আমাদের কিছু করার নেই। আমরা শুধু জেলা প্রশাসক স্যারকে এবং উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাতে পারি। তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন। 

পরিবেশ অধিদপ্তরের মনিটরিং এন্ড এনফোর্সমেন্ট শাখার নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট কাজী তামজিদ আহমেদ বলেন, আমাদের লোকাল অফিস ও ডিসি অফিসে বিষয়টি জানান। তারা যদি মনে করে আবারও অভিযান পরিচালনা করতে হবে তাহলে আমরা আবার আসবো। 

এ প্রসঙ্গে মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক রেহেনা আকতার বলেন, আইন ভঙ্গ করে কোন ধরনের কার্যক্রম পরিচালনার সুযোগ নেই। ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে আবারও আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার দুপুরে পরিবেশ অধিদপ্তরের মনিটরিং এন্ড এনফোর্সমেন্ট শাখার নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট কাজী তামজিদ আহমেদ ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার আউটপাড়া এলাকার আলী ব্রিকসকে পাঁচ লাখ, হিজলাইন এলাকার এস এম এস ব্রিকসকে পাঁচ লাখ, লেমুবাড়ী এলাকার এমিকা ব্রিকসকে পাঁচ লাখ, হাসলী একতা ব্রিকসকে পাঁচ লাখ, পূর্ব হাসলী এলাকার আব্দুল্লাহ আল সোবহান ব্রিকসকে ছয় লাখ ও আলম নগর ব্রিকসকে ছয় লাখসহ মোট ৩২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া ইটভাটাগুলোর একাংশ স্কেভেটর দিয়ে ভেঙ্গে ভাটার কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়। এরআগে, গত ২৩ জানুয়ারী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুহসিয়া তাবাসসুম ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার ৪টি অবৈধ ইটভাটায় অভিযান চালিয়ে প্রত্যেককে বিশ হাজার টাকা করে মোট আশি হাজার টাকা জরিমানা করেন। সেসময় ওই ৪ ইটভাটা ৩০ দিনের মধ্যে কার্যক্রম বন্ধ অথবা আইন অনুযায়ী গ্রহণযোগ্য স্থানে স্থানান্তরের মুচলেকা গ্রহণ করা হয়।

Scroll to Top