স্টাফ রিপোর্টার: মানিকগঞ্জের কৃতি সন্তান ক্যাপ্টেন (অবঃ) আব্দুল হালিম চৌধুরী । ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে তার অবদান অপরিসীম। তিনি ছিলেন একজন দক্ষ সামরিক অফিসার । এই যুদ্ধে তিনি ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন।
তিনি ১৯২৮ সালে ১ ফেব্রুয়ারী জেলার শিবালয় থানার শিবালয় ইউনিয়নের এলাচীপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম আব্দুল মতিন চৌধুরী এবং মাতার নাম হাসিনা চৌধুরী ।
মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি ২ নং সেক্টরের অধীনে গাজীপুর এবং ঢাকা সদর ও এর পশ্চিম অঞ্চলসহ ২২ থানার সাব সেক্টরের অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ দিবাগত রাতে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে মানিকগজ জেলায় স্বাধীনতার পক্ষে ৭ সদস্য বিশিষ্ট রিপ্লবী কম্যান্ড কাউন্সিল গঠন করা হয় । এই কাউন্সিলের নেতৃত্বের দায়িত্বে ছিলেন দক্ষ সামরিক অফিসার ক্যাপ্টেন (অবঃ) আন্দুল হালিম চৌধুরী । তিনি অসীম সাহসী একজন ব্যাক্তি ছিলেন ।
তিনি শিবালয় উপজেলার আরুয়া ইউনিয়মনে ঘোণাপাড়া গ্রামে নানা বাড়ি থেকে মালুচী উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে লেখাপড়া করতেন । ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর শ্রেনীতে অধ্যায়নকালে ১৯৫০ সালে তিনি সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন । তিনি ১৯৫০ -২৯৬২ সাল পর্যন্ত এই বাহিনীতে কর্মরত ছিলেন ।
১৯৫০-৬২ সময়ে পাঞ্জাব রেজিমেন্টে এডজুট্যান্ট ও কোয়ার্টার মাস্টার, চতুর্দশ ডিভিশনের জিওসি’র এডিসি এবং তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তান ইউ-ও-টি-সি ব্যাটালিয়ানের কমান্ডিং অফিসার ছিলেন।
শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি ১৯৬২ সালে ক্যাপ্টেন হিসেবে সেনাবাহিনী থেকে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করেন। ১৯৭৯ সালে সাধারণ নির্বাচনে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং ১৫ই এপ্রিল বাংলাদেশ সরকারের মন্ত্রী নিযুক্ত হন। মন্ত্রী হিসাবে সর্বশেষে তিনি কৃষি ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন।
১৯৭১ সালে ২৫ মার্চ দিবাগত রাত্রে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে মানিকগঞ্জ জেলার স্বাধীনতার স্বপক্ষ শক্তির সমন্বয়ে সাত সদস্যের একটি কমান্ড কাউন্সিল গঠন করা হয়। ক্যাপ্টেন হালিম চৌধুরীকে নেতৃত্বের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি ছিলেন অসীম সাহসী। যুদ্ধকালীন সময়ে তিনি ২২টি থানার সমন্বয়ে গঠিত ঢাকা সদর ও গাজীপুরে এরিয়া কমান্ডারের দায়িত্ব পালন করেন।
স্বাধীনতা যুদ্ধের এই মহান বীর সেনানী ১৯৮৭ সালের ৭ই অক্টোবর পরলোক গমন করেন।