উৎসবমুখর প্রজাপতি মেলায় উপচে পড়া ভিড়

জাবি: কোথাও কোনো বাধা নেই। গাছে গাছে পাখা মেলে মুক্তির জয়গান গেয়ে চলেছে। আবার কিছুদূরে মুক্ত আকাশে ডানা মেলে উড়ছে তারা। বিচিত্র ও মনোমুগ্ধকর তাদের গায়ের রঙ। এসব হরেক রকমের প্রজাপতি দেখতে ভিড় জমিয়েছে হাজারো দর্শনার্থী। 

শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) প্রজাপতি মেলার ১৩তম আসরে দেখা মিলেছে এমন চিত্র। এতে একসাথে শত শত প্রজাপতির চঞ্চল উড়াউড়ি দেখা গেছে। 

‘উড়লে আকাশে প্রজাপতি, প্রকৃতি পায় নতুন গতি’- স্লোগানকে ধারণ করে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ‘কীটতত্ত্ব’ শাখার উদ্যোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান মিলনায়তন চত্বরে অনুষ্ঠিত হয় এ মেলা। মেলাকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসকে সাজানো হয়েছিল বর্ণিল সাজে। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে প্রজাপতির ছবি সম্বলিত ব্যানার-ফেস্টুন, পোস্টার ঝুলানো হয়। 

ছুটির দিন হওয়ায় মৃদু শীতকে উপেক্ষা করে সকাল থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজারো প্রজাপতিপ্রেমী মেলায় ছুটে আসেন। তরুণ-তরুণীদের পাশাপাশি মেলায় শিশু-কিশোরদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। তাদের জন্য প্রজাপতি বিষয়ক ছবি আঁকা প্রতিযোগিতা, আলোকচিত্র প্রদর্শনী, রচনা প্রতিযোগিতা, প্রজাপতির আদলের ঘুড়ি উড়ানো প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এছাড়া, বারোয়ারি বিতর্ক এবং প্রজাপতি বিষয়ক ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। ওয়াজেদ মিয়া বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রে এবং প্রজাপতি পার্কে জীবন্ত প্রজাপতি দর্শনের ব্যবস্থা রাখা হয়।

এবারের মেলায় বন্যপ্রাণী ও প্রজাপতি সংরক্ষণে অবদানের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মো. আনোয়ারুল ইসলামকে বাটারফ্লাই অ্যাওয়ার্ড এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী মো. জহির রায়হানকে বাটারফ্লাই ইয়াং ইনথুসিয়াস্ট অ্যাওয়ার্ড প্রদান করা হয়েছে। এছাড়া, ৩ জনকে বাটারফ্লাই মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়। 

সকাল ১১টায় প্রজাপতি ও বেলুন উড়িয়ে মেলার উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. নূরুল আলম। এসময়, উপাচার্য দর্শনার্থী, শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ সকলকে প্রাণ-প্রকৃতি সংরক্ষণে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। 

সার্বিক বিষয়ে প্রজাপতি মেলার আহ্বায়ক অধ্যাপক মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, প্রজাপতি যে শুধু সৌন্দর্য ছড়ায় তা নয়, এরা পরাগায়নের মাধ্যমে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় ভূমিকা পালন করে। আমাদের উচিত প্রজাপতিসহ সবধরনের প্রাণীকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করা। 

প্রসঙ্গত, প্রজাপতি সংরক্ষণ ও গণসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের ‘কীটতত্ত্ব’ শাখার উদ্যোগে ২০১০ সাল থেকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যতিক্রমী এই প্রজাপতি মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।

Scroll to Top