মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: চলছে মুড়িকাটা পিঁয়াজ আবাদের মৌসুমে ব্যস্ত সময় পার করছেন মানিকগঞ্জের কৃষকরা। এ জেলার বিশেষ বিশেষ এলাকার মাটি মুড়িকাটা পিঁয়াজ চাষের জন্য উপযোগী। যমুনা নদীর পলির কারনে শিবালয় ও হরিরামপুর উপজেলার বেশ কয়েকটি এলাকার মাটি মুড়িকাটা পিঁয়াজ চাষের জন্য খুবই উপযোগী।
মানিকগঞ্জের ৭ টি উপজেলার প্রত্যেকটি উপজেলায় মুড়িকাটা পিঁয়াজের আবাদ হলেও শিবালয় এবং হরিরামপুর উপজেলায় এর আবাদ বেশী। শিবালয়ে যমুনা নদীর চরাঞ্চল আলোকদিয়া, ত্রিশুণ্ডী, ঢালারচর, কনাইদিয়া, চরশিবালয়, কুইশ্যাহাটা এবং নালী,রূপসা, মাচাইন হরিরামপুররের ঝিটকা, ধুচুরিয়া, গোপিনাথপুর, আজিমপুর, ধুলসুরা, বেপারী পাড়াসহ প্রায় সকল চরাঞ্চলে এই পিঁয়াজের চাষাবাদ বেশী হয়। পিঁয়াজ চাষের জন্য এই এলাকার মাটি খুবই উপযোগী। এখন মুড়িকাটা পিঁয়াজ চাষে ব্যাস্ত সময় পার করছেন এলাকার কৃষকরা। মুড়িকাটা পিঁয়াজ আবাদ করতে ছোট পিঁয়াজের প্রয়োজন হয়।
এই পিঁয়াজ আবাদে বিঘা প্রতি মোট খরচ হয় ৩০/৩৫ হাজার টাকা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ও ফলন ভাল হলে প্রতি বিঘা জমিতে ৪০/৫০ মণ এই পিঁয়াজ উৎপাদন হয়। মুড়িকাটা পিঁয়াজ আবাদ বেশ
লাভজনক। এই পিঁয়াজ আবাদ করে ঘরে তুলতে সময় লাগে কম। আবাদের শুরু হতে আড়াই থেকে তিন মাসের মধ্যে এই পিঁয়াজ বাজারজাত করা যায়।
চর শিবালয়ের পিঁয়াজ চাষী মনু মিয়া জানান তিনি এবার প্রায় ৩ বিঘা জমিতে এই পিঁয়াজের আবাদ করবেন। ইতিমধ্যে তিনি ৪০ শতাংশ জমিতে এই পিঁয়াজ আবাদ সম্পন্ন করেছেন । আরো ৬১ শতাংশ জমিতে তিনি এই পিঁয়াজ আবাদ করবেন। তিন বিঘা জমিতে এই পিঁয়াজ আবাদ করতে যে পরিমান ছোট পিঁয়াজের প্রয়োজন তা তিনি সংরক্ষণ করেছেন। তাই ১০০ শতাংশ জমিতে এই পিঁয়াজ আবাদে তারখরচ কম হবে।
গত বছরও তিনি ৮২ শতাংশ জমিতে এই পিঁয়াজ আবাদ করেছিলেন, ফলনও হয়েছিল ভাল। এজন্য তিনি এবছর এই পিঁয়াজের আবাদ বেশী করছেন। ধারনা করছেন আবহাওয়া ভাল থাকলে তিনি এবার ১২০ থেকে ১৪০ মণ পিঁয়াজ ঘরে তুলতে পারবেন। এতে তিনি বেশ লাভবান হতে পারবেন।
শিবালয়ের পিঁয়াজ চাষী আব্দুল আজিজ জানান তিনি এবার ৩৯ শতাংশ জমিতে এই পিঁয়াজ আবাদ করেছেন। এতে তার কিছু ছোট পিঁয়াজ ক্রয় করতে হয়েছে। তাই তার খরচ বেড়েছে। তার প্রায় ২৪
হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এই পিঁয়াজ ঘরে তুলতে তার আরো প্রায় ৮/১০ হাজার টাকা খরচ হবে। আবহাওয়া অনকূলে থাকলে ও ফলন ভাল হলে তিনি এ থেকে ৫০/৫৫ মণ পিঁয়াজ পাবেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ এনায়েত উল্লাহ জানান,বাজারে পিঁয়াজের দাম বেশী হওয়ায় এই এলাকার চাষীরা মুড়িকাটা পিঁয়াজ চাষে ঝুঁকছে। এবার ধারনার চেয়ে বেশী জমিতে এই
পিঁয়াজ আবাদ হবে বলে মনে হচ্ছে। তিনি আশা করছেন এবার এই পিঁয়াজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।