স্টাফ রিপোর্টার: গত কয়েক দিনের টানা বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সোমেশ্বরী নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে প্লাবিত হয়েছে নেত্রকোনার দুর্গাপুরের নিম্নাঞ্চল। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে উপজেলার ৩০-৪০টি গ্রামের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ।
জানা গেছে, উপজেলার সাত ইউনিয়নের মধ্যে পাঁচটি ইউনিয়নে পাহাড়ি ঢল নেমে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, চারদিক পানিতে থইথই করছে। বাড়ি থেকে বের হওয়ার রাস্তাও রয়েছে পানির নিচে।
রোববার (৬ অক্টোবর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সোমেশ্বরী ও পার্শ্ববর্তী নেতাই নদীর পানি প্রবেশ করে উপজেলার গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়নের বন্দউষান, আটলা, পূর্বনন্দেরছটি, হাতিমারাকান্দা, ভাদুয়া, নাওধারা, জাগিরপাড়া, দক্ষিন জাগিরপাড়া, মুন্সিপাড়া, গাঁওকান্দিয়া, শ্রীপুর, জাঙালিয়াকান্দা, শংকরপুর, তাঁতিরকোনা, বিশ্বনাথপুর, আদমপুর, কান্দাপাড়া, কালাগোনা অপরদিকে কুল্লাগড়া ইউনিয়নের বিলকাঁকড়াকান্দা, দৌলতপুর, পলাশগড়া, বংশীপাড়া, গাইমারা, কাকৈরগড়া ইউনিয়নের, গোদারিয়া, বিলাশপুর, লক্ষীপুর, রামবাড়ি, দুর্গাশ্রম এবং চণ্ডিগড় ইউনিয়নের সাতাশি, চারিখাল, নীলাখালী, ফুলপুরসহ ৪৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
এসব ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় জীবনযাপন করছেন। রাস্তা, মাঠ-ঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। স্কুল, মাদ্রাসা, ঘর-বাড়ির চারপাশেই পানি। পানিতে তলিয়ে গেছে ফসলি জমি। বিভিন্ন পুকুর তলিয়ে ভেসে গেছে লাখ লাখ টাকার মাছ। গবাদি পশু নিয়েও বিপাকে পড়েছেন মানুষজন। অপরদিকে এসব এলাকায় দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্যের সংকট।
গাঁওকান্দিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা আব্দুল মালেক বলেন, আমাদের চলাচলের রাস্তায় কোমর পানি, যেভাবে পানি বাড়ছে তাতে ভয় হচ্ছে পরবর্তীতে পরিবার-পরিজন নিয়ে কোথায় গিয়ে উঠবো।
চণ্ডিগড় ইউনিয়নের বাসিন্দা মাসুদুর রহমান ফকির বলেন, আমাদের গ্রামে অনেক মানুষ পানিবন্দী, হাট-বাজারেও যেতে পারছেন না।
বাকলজোড়া গ্রামের ইউপি সদস্য মো. আবুল কাশেম বলেন, ফসলি জমি ৮০ ভাগ পানির নিচে এখন। তাছাড়াও চলাচলের প্রায় সব রাস্তায় পানির নিচে। যেভাবে পানি বাড়ছে তাতে ঘরেও পানি উঠে যাবে মনে হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, নিম্নাঞ্চলের অনেক মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় আছেন। আমাদের পক্ষ থেকে গতকাল কাকৈরগড়া ইউনিয়নের পানিবন্দী এলাকা পরিদর্শন করে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। অন্যান্য ইউনিয়নেও ত্রাণ বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।